ঢাকা,শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

পেকুয়ায় সেল্টারের জায়গায় চলছে মাটি খনন, ঝুঁকিতে মন্ত্রী পরিষদ ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, পেকুয়া:

পেকুয়ায় সেল্টারের জায়গায় চলছে মাটি খনন কাজ। সরকারী জায়গা গর্ত করে সেখানে তৈরী হচ্ছে নালা। লবণ পানি ঢুকাতে একটি চক্র সাইক্লোন সেল্টারের জায়গা খনন করে শ্রেনী পরিবর্তন কাজ চলমান রেখেছে। এ দিকে সুস্বাধু পানির উৎস বিনষ্ট করে মাছ চাষের জন্য ওই চক্রটি নদী থেকে লবণ পানি প্রবেশ করাতে স্ক্যাবেটর দিয়ে মাটি খনন কাজ অব্যাহত রাখে। এতে করে সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রের বহুতল ভবন চরম ঝুঁকির মধ্যে পতিত হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের মটকাভাঙ্গা গ্রামে আশ্রায়নের জন্য সরকার ১৯৯৮ সালে সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে। স্থানীয় সরকার বিভাগ (ইফাদ) সে সময় মগনামার মটকাভাঙ্গায় মন্ত্রী পরিষদ সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে। বহুতল ভবন ও সুউচ্চ মাটি ভরাট করে সেখানে কিল্লা তৈরী করে।

পরবর্তীতে মুজিব কিল্লা নামের ওই স্থানে সাইক্লোন সেল্টার কাম মন্ত্রি পরিষদ ভবন নির্মাণকাজ শেষ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে নিস্কৃতি পেতে উপকুল অঞ্চলে সরকার ওই সাইক্লোন সেল্টার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে। সুত্র জানায়, মটকাভাঙ্গা গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ছেলে মোস্তাক আহমদ প্রকাশ মিয়া ও তার ছেলে রফিকুল হাসান সোহেল সরকারী জায়গা খনন কাজে ব্যস্ত রয়েছে। ভবনটি এদের বাড়ির নিকট হওয়ায় তারা ক্রমান্বয়ে ভবনের জায়গা জবর দখল ও গ্রাস করার কৌশলে মেতেছে।

ওই স্থানে শ্রেনী পরিবর্তন করে মুজিব কিল্লাটি মিশে ফেলে সেখানে নালা তৈরীর কাজ অব্যাহত রাখে। স্থানীয়রা জানায়, কাটাফাঁড়ি নদী থেকে লবণ পানি লোকালয়ে প্রবেশ করাতে সেখানে মাটি খনন কাজ করছে তারা। পাউবোর বেড়িবাঁধ কেটে নদী পয়েন্টে পলবোট স্থাপন করে। পলবোট মুখ থেকে সাইক্লোন সেল্টার পর্যন্ত প্রায় দেড় চেইন জায়গায় মাটি খনন কাজ চলমান রয়েছে।

আজ ২৮ মে (মঙ্গলবার) বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে মন্ত্রী পরিষদ সাইক্লোন সেল্টার ঘেষে নালা তৈরীর কাজ চলছে। স্ক্যাভেটর দিয়ে মাটি খনন কাজ করা হচ্ছে। দেখা গেছে, স্ক্যাভেটর যন্ত্রটি মাটি খনন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। দৈর্ঘ্য প্রায় এক চেইন পর্যন্ত নালা তৈরীর কাজ হয়েছে। প্রস্থ ৩ থেকে ৪ ফুট হবে। এর গভীরতা আনুমানিক ৪ ফুট হবে।

স্থানীয়রা জানায়, মোস্তাক আহমদ ও তার ছেলে সোহেল মাটি খনন কাজ বাস্তবায়ন করছে। এ দিকে ওই স্থানে গর্ত হওয়ায় আরও বেশ কিছু স্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। দুবাই প্রবাসী ওবাইদুর রহমান জিসান তার সীমানায় পাকা সীমানা প্রাচীর নির্মান করেছে। মাটি খনন হওয়ায় তার স্থাপনা দেবে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জিসানের পিতা প্রকৌশলী তফাজ্জল আহমদ চকরিয়া নিউজকে জানায়, তারা সরকারী জায়গা বেহাত করছে। জায়গাটি মুলত মিষ্টি পানির উৎস। এখন তারা মাছ চাষ করতে জমিতে লবণ পানি প্রবেশের চেষ্টা করছে। গ্রামে চরম ক্ষতি হবে। আমাদের দেয়াল দেবে যাবে। আর সাইক্লোন সেল্টারটিও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। জিসানের মা রওজাত আরা জানায়, তারা গায়ের জোরে সাইক্লোন সেল্টারের জায়গা খনন করছে। আমার ছেলের পাকা দেয়ালও গর্তে পতিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ওবাইদুর রহমান জিসান জানায়, সাইক্লোন সেল্টার বিধ্বস্ত হবে। এ ভাবে চলতে থাকলে আমার দেয়ালও গর্তে দেবে যেতে পারে। জনগনের সম্পদের উপর এমন আচরন বরদাশত করার মত নয়।

পাঠকের মতামত: